0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব- ২৬২





পরিচয়(২৬২)(সিজন-৯)

 

মেয়েদুটো আর ছেলেটা নিশানের দিকে ইশারা করে দেখাল । সামনের মাস্তানটা তখন একটা  জঘন্য কাজ করলো । বিরিয়ানির খাপ থেকে অল্প একটু বিরিয়ানি মুখে দিয়ে কিছুক্ষণ চিবিয়ে সেটা বের করে আবার হাতে নিলো । এরপর কোমর থেকে গুলি বের করে নিশানের মাথায় তাক করে অন্য হাত যাতে  চিবিয়ে বের করা বিরিয়ানি রয়েছে সেটা খাচার ভেতর ঢুকিয়ে নিশানের কাছে এগিয়ে দিয়ে বলল, “খায়েগি নাকি মরেগি?” নিশান দূরে সরে গেলো । প্রায় বমি করবে করবে অবস্থা । মেয়েদুটোর সাথে যে অন্য একটা ছেলে ছিল, সে বলল, “খাও নিশান! নাহলে কিন্তু এরা সত্যি তোমাকে মেরে ফেলবে ।” নিশান ভয় আর রাগ একসাথে মিশিয়ে বলল, “না! ছি! এটা কিছুতেই সম্ভব না ।” লোকটা তখন সেই বিরিয়ানি নিজের মুখে পুরে নিলো । মেয়ে দুটো আর ছেলেটা ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করেছে, যেন এখনি নিশানকে মেরে ফেলবে এই লোকটা । আকাশ তো আগে থেকেই চোখ বন্ধ করে আছে । একটু পর লোকটা গুলি ভালো করে নিশানের দিকে তাক করে বলল, “ঠিক আছে, মারনে কেলিয়ে প্রস্তুত হো যাও!”

আবির এলো মারুফের কাছে । আবার চেয়ার টেনে বসলো । মারুফ বলা শুরু করলো, “আমি জানি না আমি যা কইতাছি তা ঠিক কিনা, তয় আমাগো মতো অন্যান্য গ্যাং-এর লোকেদের মুখে এইগুলই শুনছি । ইন্ডিয়া থেইকা একদল লোক আইছে । হেরা বাংলাদেশ থেইকা লোক পাচার কইরা ইন্ডিয়ায় নিয়া যাইতেসে । এরপর সেইহানে পরথমে এইসব বাচ্চা দিয়া যত অনৈতিক কাজ করায় । এরপর এইসব  বাচ্চার কথা বলার ক্ষমতা নষ্ট কইরা দেয়, চোখ কিডনী বিক্রি কইরা দেয়, তারপর এদের ভিক্ষা করাইতে বসাইয়া দেয়, সেই টাকাও এই বাচ্চাগো ভাগ্যে জোটে না । যায় সব ওই পাচারকারীদের পেটে । আর কিডনির অভাবে ধীরে ধীরে যখন…………………।” কথার এই মুহূর্তে থেমে গেলো মারুফ । আবির জিজ্ঞেস করলো, “কি? ধীরে ধীরে যখন কি?” মারুফ বলল্, “ধীরে ধীরে যখন ওদের শরীরের শক্তি কমে যায়, মারা  যায়………” আবির কথা শুনে কেপে উঠলো । মারুফ বলতে লাগলো, “………তখন ওরা, এদের মেরে শরীরের অন্যান্য যেসব অঙ্গ বিক্রি করা যায়, সেগুলো বিক্রি করে লাশ ভাসিয়ে দেয় খালে । সেই খালও হয়তো ভারতেরই কোন নির্জন এলাকার ।” আবির ভয় পেয়ে গেলো । একটা অদ্ভুত কল্পনায় ঢুকে গেলো আবির । এক খালের ধারে দাড়িয়ে আছে আবির, সেখানে শুধুই লাশ আর লাশ । সেই লাশগুলোর  মাঝে একটা লাশ দেখল, চোখ নেই, পেটের মাঝের  চামড়া কাটা, ভেতরের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে আছে, চেহারা বিকৃত হয়ে গেলেও চিনতে ভুল হল না, এটা নিশান! যখনই আবির কল্পনায় এটা দেখল, একটা চিৎকার দিয়ে উঠলো । তারপর কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থাকল আবির । মারুফ বলল, “আমি জানি, তোর অনেক  কষ্ট হচ্ছে । জানি তুই আমার ক্ষতি করেছিস, কিন্তু আমি কষ্ট পাই নি । কারণ আমি পাপ করেছিলাম । কিন্তু বল তো, তুই কি পাপ করেছিলি?” আবির এতক্ষণ মাথা নিচু করে ছিল । মারুফের কথা শুনে মাথা তুলে তাকাল । বিড়বিড় করে বলতে লাগলো, “আমি! আমি! পাপ! কি পাপ!.....................!” মারুফ বলল, “সব ঠিক হইয়া যাইবে ।” আবিরের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি পড়ে গিয়েছিলো । চোখ মুছে জিজ্ঞেস করলো, “কোথায় আছে ওই মাস্তানদের আস্তানা?” মারুফ মাথা নিচু করে হতাশা প্রকাশ করলো । মুখে কিছু বলল না ।

যেই মুহূর্তে সামনের মাস্তান গুলিটা করতে যাবে, এমন সময় আরেকটা মাস্তান রুমে ঢুকে  বলল, “রুক যাও! বিমল!” যে লোকটানিশানকে গুলি করতে গিয়েছিলো তার নাম বিমল । তাকে ডেকেই ভেতরে  এলো অন্য মাস্তান প্রকাশ । প্রকাশ বিমলের হাত থেকে গুলিটা নিয়ে বলল, “কি করতে যাচ্ছিলি তুই! আভি একে আগার তুই খুন কার দেতা, তাহলে এর থেকে পেয়সা কামাতা কন? বস কো হাম কি জবাব দেতা?” বিমল জিজ্ঞেস করলো, “কিউ, উস দিন তো লাক্সমান নে এক লারকা কো মারাথা?” প্রকাশ বলল, “আরে! সে বাচ্চা তো কুচ দিন মে হি মার যাতা থা অ্যায় সে হি । ইস লিয়ে বসনে কুচ নেহি কাহা । উস বাচ্চাকা ক্যান্সার লাস্ট এইজ থা ।” নিশান একটু স্বস্তির দম নিলো । সাথে এটাও বুঝল, এরা এতো সহজে ওদের মারতে পারবে না ।

 

আগামী পর্বেঃ

প্রকাশ তখন জিজ্ঞেস করলো, “ইন লোগো কো খানে দিয়েছিস?” বিমল, “ওহ হো! ভুল হি গায়া!” বলে আরেকটা যে প্যাকেট এনেছিল, সেটা খুলে ভেতর থেকে তিনটে রুটি বের করে ছুড়ে মারল খাঁচার ভেতর মাটির ওপর । সাথে সাথে মেয়ে দুটো আর  ওদের সাথে থাকা ছেলেটা ঝাপিয়ে পড়লো সেই রুটির ওপর । কাড়াকাড়ি শুরু করে দিল । আকাশও ওদের দেখে ঝাপিয়ে পড়লো । নিশান পারলো না । এই অবস্থা দেখে মনের ভেতরটা কেমন শিহরণ জাগিয়ে তুলল ওর ।