0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-২৬১





পরিচয়(২৬১)(সিজন-৯)

 

জিজ্ঞেস করলো, “মানে?” মারুফ বিকট এক হাসি হেসে উঠলো । তারপর বলল, “ম্যালা ট্যাকার চালান আছিলো, ইয়াবার চালান, করতে পারলেই কোটি ট্যাকা হাতে আইতো বুঝলি, কোটি ট্যাকা, কিন্তু তর দ্যা ইনভেস্টিগেশন শো আমাগো প্রথম দিনের চালানেই আমাগো ধইরা ফেললো, টিভিত দেহানো হইলো, আর আমাগো লগে কেউ কন্টাক্ট করলো না চালান নেওয়ার লাইগা । তাইলে ক, তর কাছে প্রতিশোধ নিমু, নাকি অন্য কারো কাছে, হ্যাঁ!” আবির কিছুক্ষণ ভাবলো । তারপর আবার বিরক্ত হয়ে বলল, “ফাইন, আমার রক্ত দিয়ে গোসল করার ইচ্ছা তো আমার না, আমি আপনার আমার দেহটাই দিয়ে দেবো, পারলে আমাকে কেটে খাবেন, রক্ত দিয়ে গোসল করবেন । বা আমার মাংস দিয়ে রাস্তার কুকুরের সেবা করবেন, তার আগে আপনি আমাকে বলুন, ছেলেধরাদের ব্যাপারে আপনি কি কিছু জানেন?” মারুফ কিছু বলল না । আবির একটা বিরক্তির দম ফেলে উঠে দাড়িয়ে বলল, “আপনার কাছে আসাটাই আমার ভুল হয়েছে, আমার মূল্যবান সময় নষ্ট খালি খালি ।” বলে আবির যাবার সময় একবার দাড়িয়ে বলে গেলো, “গুলিটা পেটের ওই যায়গায় লেগেছে বলে কিন্তু বেচে গেছেন, একদম হৃদয় বরাবর লাগলে আর বাচতে পারতেন না । ভালো হয়ে যান, মরার ভয় করেন, আল্লাহর ইবাদাত করেন ।” বলে আবির আবার বেরোনোর জন্য যে-ই না দরজার দিকে হাত বাড়াল, অমনি মারুফ বলে উঠলো, “সব না জানলেও অনেক কিছুই জানি এই ছেলেধরাদের ব্যাপারে ।” আবির দরজা না খুলে দাড়িয়ে গেলো । তারপর পেছন ফিরে মারুফের দিকে তাকাল । মারুফ ওপর নিচ মাথা নাড়ল ।

কলিংবেল বাজতেই দরজা খুলল জরিনা । অয়ন আর সাবিত এসেছে । ভেতরে ঢুকল ওরা । চয়নিকা কাঁদতে কাঁদতে সোফার ওপর ঘুমিয়ে পড়েছে । জরিনা সাবিতকে জিজ্ঞেস করলো, “ও সাবিত ভাইয়া, ছুডো বাইয়ার কোন খোঁজ পাইলেন?” সাবিত বলল, “না আপু, পুলিশ স্টেশনে অফিসার অপুকে বলে এসেছি । উনি খোঁজ নিচ্ছেন । এদিকে আঁখি তো ফোন করে খোঁজ নিতে নিতে পাগল হয়ে যাচ্ছে ।” জরিনা বলল, “আল্লাহ! আপুরে কইও টেনশন না করতে, পেটে আরেকখান জীবন আছে । এহন টেনশন করা ঠিক না ।” সাবিত বসতে বসতে বলল, “হ্যাঁ আপু, তাই তো বোঝানোর চেষ্টা করছি, বুঝলে হয় ।”  চয়নিকাকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করলো, “ও এখানে এভাবে শুয়ে আছে কেন? চোখ দেখে তো মনে হচ্ছে কান্না করেছে!” জরিনা বলল, “আমিও বুঝলাম না ভাইয়া, চুনি আফা আবির ভাইয়ারে কি কইছে? খালু সেই জন্যে রাগ কইরা চড়  মারছে ।” অয়ন জরিনার কাছে যেয়ে বলল, “বাবা একদম ঠিক করেছে । আজ আপু যা বলেছে তার জন্য এটাই আপুর প্রাপ্য ছিল ।” জরিনা জিজ্ঞেস করলো, “কি কইছে?” অয়ন সবটা খুলে বলল । শুনে জরিনা হ্যাঁ হয়ে গেলো । তারপর বলল, “আল্লাহ! আইচ্ছা, বাদ দাও । এহন বসো, তোমাগো খাওন দেই । দুপুর পার হইয়া বিকেল হইতে চলল ।”

খাচার ভেতর ঢুকে সেই যে আকাশ শুয়েছে, আর উঠে বসেওনি । নিশান চুপ করে এক কোণে বসে আছে । সামনে থাকা মেয়ে দুটোও চুপচাপ । ছেলেটা যদিও মাঝে মাঝে “মা!মা!” করে হাউমাউ করে কেঁদেছে, তার বেশি কিছু আর না । পেটে খিদে সকলের । সামনে থাকা এক মাস্তানের হাতে বাইরে থেকে আসা এক মাস্তান দুটো বাক্স নিয়ে এলো । একটা বিরিয়ানির প্যাকেট, অন্যটা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না । একটু পর লোকটা বিরিয়ানির প্যাকেট খুলে খাওয়া শুরু করলো । সেই গন্ধ ভেসে আসছে । নিশান খেয়াল করলো, ছেলেটা খাচার গ্রিল ধরে খাবারের দিকে দিকে তাকিয়ে আছে । ঠোঁটের কোন দিয়ে লালা বেরোচ্ছে । পেটের ডাক তো শোনা যাচ্ছেই, তবে সেটা প্রায় সবারই । মেয়েদুটোও এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে । আকাশ শুয়ে আছে, চোখ সহজে সেদিকে না পড়লেও গন্ধ ঠিকই আসছে, তাই গায়ের জামা দিয়ে নাম চেপে ধরল । যে মাস্তানটা খাচ্ছে, সে যখন খেয়াল করলো, এরা তার খাবারের দিকে নজর দিয়েছে, তখন সে বিরক্তির সাথে বলল, “এ!এ! কোন তুমাগো মেরা খাবারমে নাজার দেনে মে হিম্মাত দিয়েছে! চোখ সরা!” মেয়েদুটো মাটির দিকে তাকালেও ছেলেটা ঠিকই তাকিয়ে রইল । এই দেখে লোকটা উঠে এসে খাচার সামনে একটা পর্দা টেনে দিলো । ফলে খাচার ভেতরটা অন্ধকার হয়ে গেলো । একটু পর নিশান মেয়েদুটোকে জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, এখানে খাবার দেয় না?” নিশানের কথা শুনে যেন মেয়েদুটো ভয় পেয়ে গেলো । সাথে ছেলেটাও । নিশান ভ্রু কুচকে ওদের দিকে তাকাল । নিশান আরও কিছু বলতে গেলে ওরা হাত দিয়ে ইশারা করে চুপ করতে বলল । একটু পর সেই মাস্তান মুখে একটা  শয়তানি হাসি নিয়ে এগিয়ে এসে পর্দা খুলে জিজ্ঞেস করলো, “খানা কা কথা কন বলেছে?” সবার কাঁপছে । আকাশ আর নিশান বাদে । ওরা বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে । মাস্তানটা আবার জিজ্ঞেস করলো, “আমি কুচ জিজ্ঞাসা করেছি, খানা কা কথা কন বলা হ্যাঁয়?” মেয়েদুটো আর ছেলেটা নিশানের দিকে ইশারা করে দেখাল ।

 

আগামী পর্বেঃ

এক খালের ধারে দাড়িয়ে আছে আবির, সেখানে শুধুই লাশ আর লাশ । সেই লাশগুলোর  মাঝে একটা লাশ দেখল, চোখ নেই, পেটের মাঝের  চামড়া কাটা, ভেতরের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে আছে, চেহারা বিকৃত হয়ে গেলেও চিনতে ভুল হল না, এটা নিশান!