0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-২৫৮




পরিচয়(পর্ব-২৫৮)(সিজন-৯)

 

বলে আবার  কাঁদতে  শুরু করলো । এমন সময় কেউ একটা জানালা মতো কিছু খোলার আওয়াজ এলো । তারপর কেউ যেন সেখান থেকে কেউ রুক্ষ কণ্ঠে বলে উঠলো, “এই! চুপ কর! কান্দোস ক্যা!” আকাশ আরও জোরে কাঁদতে শুরু করলো । লোকটা তখন আবার বলে উঠলো, “চুপ কর! আমার হাতে কইলাম গুল্লি আছে! খুলি উরাইয়া দিমু কইলাম!” এটা শুনে আকাশ নিজেকে এক প্রকার জোড় করে কান্না থামিয়ে দিল । এরপর আবার কেমন জানালা বন্ধ হবার আওয়াজ । বোধ হয় একটা ট্রাক, ট্রাকের ড্রাইভার যেমন পেছনের জানালা দিয়ে ভেতরের সব ঠিকঠাক আছে কি না দেখতে পায়, সেরকম জানালা দিয়েই হয়তো কথাটা বলে চলে গেলো । নিশান বলল, “ভয় পেয়ো না আকাশ, আল্লাহ আছেন, সব ঠিক হয়ে যাবে দেখো ।” আকাশের কাছ থেকে কোন জবাব পেলো না নিশান ।

“কি করে হল এসব! কখন হল!” দোকানে এসে চয়নিকাকে বলল আবির । চয়নিকা কাঁদতে কাঁদতে আবিরকে জড়িয়ে ধরতেই আবির চয়নিকাকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিল । চয়নিকা অবাক হয়ে আবিরের দিকে তাকাল । ওর কান্না থেমে গেলো মুহূর্তের মধ্যেই । আবির তর্জনী আঙ্গুল দেখিয়ে রাগ আর কষ্ট নিয়ে বলল, “স্টপ দিস ননসেন্স! নেকামি কোরো না! কি করো তুমি বাসায়! যায় কি করে হারিয়ে!” চয়নিকা বলল, “আবির, নিশান তো অয়নদের এখানে……………।” আবির চয়নিকার কথা শেষ না করতে দিয়ে আবির বলল, “কেন? আসবে কেন, নিশ্চয় তুমি ওকে সময় দাও না!” অয়ন বলল, “ভাই এসব কি বলছো! ও নিজে থেকে এসেছে বাসায় আমার সাথে খেলতে, আপুর জন্য না!” আবির অয়নের দিকে তাকিয়ে বলল, “তাহলে তুই কি করছিলি! নিশ্চয় নিশানকে নিজের ঘর থেকে তাড়িয়ে দিস নি!” অয়ন মাথা নিচু করলো । কারণ ও এটাই করেছে । অয়ন জবাব না পেয়ে আবির বুঝল, অয়ন এ কাজ করেছে । আবির নিজের কপাল চেপে ধরল দুশ্চিন্তায় । আর বিড়বিড় করে বলল, “না না! এখন ঝগড়া করে কিচ্ছু হবে না! আগে কিছু একটা করতে হবে ।” চয়নিকার বাবা বলল, “আবির বাবা, আমার মনে হয়, পুলিশে একবার জানানো দরকার ।” আবির বলল, “আমি জানি না পুলিশে বলে কতোটুকু উপকার পাবো আমি ।” এমন সময় এলো সাবিত । এসেই চয়নিকার বাবাকে জিজ্ঞেস করলো, “কি করে হল এটা বাবা?” চয়নিকার বাবা জিজ্ঞেস করলো, “বাবা তুমি?” সাবিত বলল, “আমাকে জরিনা আপু জানাল । আঁখিকে জানাই নি, নাহলে পেটে বাচ্চা নিয়েই আসতে চাইতো । জরিনা আপুকেও বারণ করেছি বলতে ।” চয়নিকার বাবা সব খুলে বলল সাবিতকে । সাবিত বলল, “আল্লাহ! এখন কি ভাবলেন, কি করবেন এখন?” আবির সাবিতকে বলল, “ভাই, তুমি অয়নকে নিয়ে পুলিশ স্টেশনে যাও, আমার যে পরিচিত বন্ধু আছে, অপু, ওর কাছে যাও, অয়ন চেনে ওর স্টেশন । আর বাবা, আপনি বাসায় যান । আপনার শরীর তেমন ভালো না, কিছু হলে আমি বা সাবিত ভাই কল করে জানাবে ।” চয়নিকার বাবা যেতে চাইল, কিন্তু আবির জোড় করায় আর গেলো না । চয়নিকা তখন আবিরকে বলল, “আবির! আমিও যাবো তোমার সাথে!” আবির বলল, “জাহান্নামে যাও! কিন্তু আমার সাথে যেও না! তোমাকে দেখলেই আমার রাগ উঠছে এখন!” চয়নিকাও এখন রেগে যেয়ে বলল, “কেন এতো ভাব দেখাচ্ছো তুমি! নিশানের জন্য! ভুলে যেও না ও কিন্তু তোমার সন্তান না! ও আমার আর রাজের………………………।” বলতে গিয়ে থেমে গেলো চয়নিকা । যে কথাটা ও বলে ফেললো, সেটা ওর বলা চরম ভুল হয়েছে বুঝতে পেরেই থেমে গেলো । মনে মনে ওর আফসোস হতে লাগলো । এদিকে আবির কথাটা শুনে পাথর হয়ে গেলো । কিছুক্ষণ চয়নিকার দিকে তাকিয়ে রাস্তার দিকে হাটা ধরল, কিছু না বলেই । সাবিত অয়নকে বলল, “অয়ন চল, পুলিশ অফিসার অপুর স্টেশনে ।”  বলে সাবিত আর অয়ন রওনা হল । চয়নিকার বাবা চয়নিকাকে বলল, “দ্যাখ মা, আবির রাগের বশে একটু কথা না হয় বলেইছে তোকে, আর ও এরকম তুই জানিসই, কিন্তু তুই যে কথাটি বললি, এটা কিন্তু চরম অন্যায় হয়েছে, চরম অন্যায়!” বলে চয়নিকার বাবা বাসার দিকে রওনা হল । চয়নিকা দোকানের চেয়ারে বসে একা কাঁদতে লাগলো ।

ঝাঁকুনিটা হঠাৎ থেমে গেলো । ইঞ্জিনের আওয়াজটাও । গাড়িটা বোধ হয় থেমে গেছে । একটু পর কে যেন গাড়ির পেছনে উঠলো । অনেক্ষণ পর সে নিশানের কাছে এসে চোখের বাঁধন খুলে দিল । এতক্ষণ লোকটা আকাশের হাতের বাঁধন খুলে দিয়েছে । অয়ন দেখল আকাশকে । ওর চেয়ে হালকা লম্বা হবে । ফর্সা, মাথায় বড় বড় চুল । চোখদুটো ছোট ছোট, খুব সম্ভবত চশমা পড়ে, এখানে ধরে আনার সময় হয়তো পড়ে গেছে । নাম চোখা । নিশান আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, “হাই!” আকাশ নিশানের দিকে তাকিয়ে বলল, “হাই!” আকাশ চোখ বার বার খুলছে আর বন্ধ করছে । হয়তো চশমা ছাড়া ঠিক মতো দেখতে পারছে না । একটু পর লোকটা নিশান আর আকাশকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মাথায় গুলি ঠেকিয়ে বলল, “যা কমু, তাই শুনবি, বারাবারি করবি তো গুল্লি কইরা খুলি উড়াইয়া দিমু কইলাম! এহন হাট!” নিশান আর আকাশ হাটতে লাগলো । নির্জন ঘন জঙ্গল । এখানে মানুষ থাকে বলে তো মনে হয় না । অবশ্য যেখানে মানুষ থাকেনা সেখানে এসব শয়তানদের আখড়া বসে ।

 

আগামী পর্বেঃ

লোকটা বলল, “ভাই ভাই! মাফ কইরা দেন! আমি মারুফ ভাই এর আন্ডারে কাম করি, ডেইলি পকেট না মারলে পেটে ভাত জোটে না ভাই, গরীব মানুষ ভাই! মাফ কইরা দেন!” আবির হঠাৎ কিছুক্ষণ চুপ হয়ে গেলো । তারপর জিজ্ঞেস করলো, “কার আন্ডারে কাজ করিস?” লোকটা বলল, “হ ভাই!” আবির আবার জিজ্ঞেস করলো, “ওই কমলাপুর স্টেশনের ওইদিকে যার আস্তানা?” লোকটা বলল, “হ ভাই, আপনে চেনেন?” আবির বলল, “চিনি, খুব ভালো ভাবেই ।”