0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব- ২৫৭





পরিচয়(২৫৭)(সিজন-৯)

 

কিছুক্ষণের মধ্যে নিশান জ্ঞান হারাল ।

ছাদে যেয়ে চয়নিকা দেখল, একটা ছেলে দাড়িয়ে ছাদের কোণে । উলটো ঘুরে দাড়িয়ে আছে । চয়নিকা ছেলেটার কাছে এগিয়ে যেয়ে কাধে হাত রেখে “নিশান!” বলে ডাকতেই ছেলেটা পেছন ফিরে তাকাল । না! এটা নিশান নয় । চয়নিকার সাথে ওর বাবা আর জরিনাও এসেছে । চয়নিকার বাবা বলল, “কীরে, মা, পেলি?” চয়নিকা বলল, “না বাবা, পাইনি ।” একটু পর চয়নিকা কাদতে শুরু করলো । জরিনা চয়নিকাকে কাদতে দেখে বলল, “আফা কাইনদেন না! আগে ছুডো ভাই রে খুইজা লই!” চয়নিকা কিছুই বলতে পারছে না, শুধুই কাদছে । এমন সময় লিফট দিয়ে ওপরে এলো অয়ন । এসেই বলল, “আপু, বাবা, আমি নিচে  গিয়েছিলাম, দারোয়ান বলল, নিশান বাইরে গিয়েছে ।” কথাটা শুনে চয়নিকার বুকটা ধরাস করে উঠলো । উঠে দাড়িয়ে অয়নের কাছে যেয়ে অস্থিরতার সাথে বলল, “কোথায় গেছে! বাসায় তো যায় নি! কোথায় গেছে বল!” চয়নিকার বাবা বলল, “আচ্ছা, আগে চল, বাইরে তো খুঁজে দেখতে হবে!” চয়নিকা তাড়াতাড়ি লিফটের দিকে রওনা হল । চয়নিকার বাবা বলল, “জরিনা, অয়ন, চল । চয়নিকাকেও একা  ছাড়া যাবে না ।” এরপর অয়ন আর চয়নিকার বাবা-ও গেলো । নিচে যেয়ে চয়নিকা আবারও অস্থিরতার সাথে দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করলো, “কোথায় গেছে আমার ছেলে! আপনি ওকে যেতে দিলেন কেন! কোনদিকে গেছে বলেন! কোন দিকে গেছে!” দারোয়ান হালকা ভয় পেয়ে বলল, “আফা, মুই ক্যামতে কইতাম আপনের পোলা কই যাইবো!” চয়নিকার বাবা বলল, “আহা! বলেন না! কোনদিকে গিয়েছে?” দারোয়ান বলল, “তা তো খেয়াল করি নাই, তয় মসজিদের রাস্তার  দিকে গেছে হেইয়াই দেখছি!” চয়নিকা বাইরে চলে গেলো । চয়নিকার বাবা বলল, “অয়ন তুই আমার সাথে চল, জরিনা, মা তুমি বাসায় থাকো । কিছু হলে জানিয়ো ।” জরিনা বলল, “আইচ্ছা খালু!” তারপর জরিনা অয়নকে উদ্দেশ্য করে বলল, “অয়ন ভাইয়া, আবির ভাইয়ারে কল দিয়া জানাইও!” বলে জরিনা বাসায় যাবার জন্য লিফটের দিকে গেলো, অয়ন আর ওর বাবা বাইরে গেলো চয়নিকার কাছে । রাস্তায় চয়নিকা চারপাশে তাকিয়ে খুজছে নিশানকে । ও জানে না পাবে কি না । রাস্তার এতোগুলো মানুষের সামনে জোরে জোরে চিৎকার করে “নিশান! কোথায় তুই! নিশান!” বলে ডাকছে আর চারপাশে তাকিয়ে খুজছে । মসজিদের কাছে এসে চয়নিকা বসে পড়ল । তারপর কাঁদতে লাগলো । অয়ন আর ওর বাবা-ও চলে এলো চয়নিকার কাছে । মসজিদের হাফেজরা তাদের পড়া শেষ করে বেরোচ্ছিলো, চয়নিকাকে দেখে সবাই দাড়িয়ে গেলো । সবার বুকে কোরআন শরীফ । চয়নিকা মাথা ঢেকেই বেরোয় সবসময় আজও বেরিয়েছে । একজন ছোট হাফেজ এসে জিজ্ঞেস করলো, “তোমার কি হয়েছে?” চয়নিকা মাথা তুলে তাকাল । চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ওর । ছেলেটা আবার জিজ্ঞেস করলো, “তুমি কাঁদছ কেন?” অয়ন বলল, “ওর ছেলে হারিয়ে গেছে, খুঁজে পাচ্ছে না ।” হাফেজ ছেলেটা চয়নিকার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল, “আমরা আল্লাহর কাছে দুয়া করবো তোমার ছেলে যেন ফিরে আসে ।” চয়নিকা ছেলেটার গালে হাত দিয়ে হালকা হাসিমুখে আদর করে দিল । একটু পর মসজিদে ইমাম মসজিদের দিকে আসতে যাচ্ছিলেন, চয়নিকাকে দেখে দাড়িয়ে গেলেন । হাফেজদের ইমাম বাসায় যেতে বলে চয়নিকার বাবাকে ডাকলেন । তারপর জিজ্ঞেস করলেন, “ আসসালামু আলাইকুম ভাই,কি হয়েছে ভাই, মেয়ে কাদছে কেন?” চয়নিকার বাবা বলল, “ওয়ালাইকুমুস সালাম হুজুর, আমার মেয়ের ছেলেটাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । কোথায় গেছে, আল্লাহই জানেন ।” ইমাম সাহেব বললেন, “হুম, আমি সন্দেহ করেছিলাম তাই । প্রায় আধ ঘণ্টা আগে আপনার নাতিকে দেখেছিলাম । মসজিদের সামনেই দেখেছিলাম । বলেছিলাম ওকে বাসায় যেতে, কিন্তু আমি আর ওকে দেখিনি । মসজিদের মুয়াজ্জিনের বাবা মারা গিয়েছেন, তাই সেখানে গিয়েছিলাম । আফসোস, আমি ছেলেটা কোনদিকে গিয়েছে তা যদি দেখতাম ।” চয়নিকার বাবা বলল, “কিছু লাগবে না হুজুর, শুধু দুয়া করবেন যেন ওকে খুঁজে পাই ।” হুজুর বললেন, “জি অবশ্যই, আমি নামাজে হারানো বিজ্ঞপ্তিটা সকল মুসলিমকে জানিয়ে দেবো । আর চিন্তা করবেন না, আল্লাহ ভরসা ।” বলেই ইমাম সাহেব সালাম জানিয়ে চলে গেলেন । চয়নিকার বাবা সালামের জবাব দিয়ে তাকিয়ে দেখলেন, অয়ন চয়নিকাকে একটা দোকানের চেয়ারে বসিয়েছে । সেখানে বসে কাদছে চয়নিকা । তারপর অয়ন কল করলো আবিরকে । “হ্যালো আবির ভাই!”

জ্ঞান ফিরতেই চোখ সহ এই অংশের চারপাশটা কেমন চাপা চাপা মনে হল নিশানের । চোখ বাধা হয়তো, কিচ্ছু দেখতে পারছে না । হাত দিয়ে দেখতে চাইলেও পারলো না, হাতও বাধা । ও দুলছে । খুব সম্ভবত গাড়িতে । নিশানের আরও কানে এলো কারও কান্নার আওয়াজ । টের পেলো ভেতরে ওর সাথে আরও কেউ আছে । নিশান ডেকে উঠলো, “হু’জ ক্রাইং?” যে কাঁদছিল তার কান্নার আওয়াজটা থেমে গেলো । তারপর নাক টেনে বলে উঠলো, “কে তুমি?” ছেলেমানুষের কণ্ঠ । বয়স নিশানের মতোই হবে । নিশান বলল, “আমি নিশান । তুমি?” ছেলেটা বলল, “আমি আকাশ । তোমাকে কি কেউ পেছন  থেকে রুমাল দিয়ে মুখ চেপে নিয়ে এসেছে?” নিশান বলল, “হ্যাঁ । তোমাকেও?” আকাশ, “হ্যাঁ!” বলে আবার  কাঁদতে  শুরু করলো ।

 

আগামী পর্বেঃ

“কি করে হল এসব! কখন হল!” দোকানে এসে চয়নিকাকে বলল আবির । চয়নিকা কাঁদতে কাঁদতে আবিরকে জড়িয়ে ধরতেই আবির চয়নিকাকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিল । চয়নিকা অবাক হয়ে আবিরের দিকে তাকাল । ওর কান্না থেমে গেলো মুহূর্তের মধ্যেই । আবির তর্জনী আঙ্গুল দেখিয়ে রাগ আর কষ্ট নিয়ে বলল, “স্টপ দিস ননসেন্স! নেকামি কোরো না! কি করো তুমি বাসায়! যায় কি করে হারিয়ে!” চয়নিকাও এখন রেগে যেয়ে বলল, “কেন এতো ভাব দেখাচ্ছো তুমি! নিশানের জন্য! ভুলে যেও না ও কিন্তু তোমার সন্তান না! ও আমার আর রাজের………………………।” বলতে গিয়ে থেমে গেলো চয়নিকা । আবির কথাটা শুনে পাথর হয়ে গেলো ।