0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয়(পর্ব-২৪৬)



পরিচয়(পর্ব-২৪৬)(সিজন-৮)


তাহলে এই ছেলেটা কে? আবির ছেলেটাকে প্রশ্ন করলো, “আপনি কে?” ছেলেটা কিছু বলার আগেই হেলেনা বলল, “অয় তো আমগোর এই জায়গীর থাহে । আমাগো রাহেলারে পড়াইতো ।” আবির ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করলো, “আপনার নাম?” ছেলেটা বলল, “আমি অতুল ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “আপনি কি এখন ফ্রি আছেন? নাকি কোথাও যাচ্ছিলেন?” অতুল বলল, “জি আমি একটু বেরোচ্ছিলাম ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “কখন আসবেন ফিরে?” অতুল বলল, “তার তো ঠিক নাই, তবে আধ ঘন্টার বেশি সময় লাগবে না ।” আবির বলল, “ঠিক আছে, ততোক্ষণে আপনি চলে আসবেন ।” আবিরের কথা শুনে চলে গেলো অতুল । আবির রেহানার সাথে ঘরে ঢুকলো । ড্রইং রুমেই বসালো আবিরকে । বেশ বড় ড্রইংরুমটা । মাঝে চারকোণা আকারে এক সেট সোফা আর সোফাগুলোর  মাঝে একটা টি-টেবিলও রয়েছে । ঘরের চারপাশে দেয়ালের সাথে আরও নানা আসবাব পত্র । আবিরকে বসিয়ে রেহানা “সাবিনা! অ সাবিনা!” বলতে বলতে অন্য রুমে গেলো । আবির ঘরের চারপাশটা দেখল । একবার । একটু পর ঘোমটা দিতে দিতে আরেক মহিলা এলো আবিরের কাছে । তারপর বলল “আসসালামু আলাইকুম!” মহিলা রেহানার মতো ততটাও বয়স্ক না । তবে দেখে মনে হচ্ছে স্মার্ট আছে । গায়ে সালোয়ার কামিজ । আবির সালামের জবাব দিয়ে জানতে চাইল, “আপনার পরিচয়টা?” মহিলা বলল, “জি, আমি সাবিনা, বাড়ির ছোট বউ ।” আবির আগেই আন্দাজ করেছিলো । আবির আবার জিজ্ঞেস করলো, “রেহানা আপা কোথায় গেলেন?” সাবিনা বলল, “জি, উনি মেঝো বউ, মানে মালেকা আপারে আনতে গেছে ।” আবির “ও” বলে আশপাশে তাকাল । মহিলা কিন্তু এসে থেকে দাঁড়িয়ে আছে । আবির বলল, “আরে বসুন বসুন দাঁড়িয়ে আছেন কেন ।” সাবিনা বসলো । আবির জিজ্ঞেস করলো, “এ বাড়িতে কি শুধু আপনিই লেখাপড়া জানেন? না মানে, রেহানা আপা একটু আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছিলেন, আপনার মাঝে আঞ্চলিকতাটা একটু কম ।” সাবিনা বলল, “আমি, রেহানা আপা আর আর তাহেরা আপা-ই শিক্ষিত, শুধু  মালেকা আপা-ই অশিক্ষিত । রেহানার আপার মাঝে আঞ্চলিকতা এমনভাবে ঢুইকা গেছে, যে উনি পুরাপুরি ছাড়তে পারেন নাই ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “আপনি শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও সতীনের সাথে সংসার করতে রাজি হয়েছিলেন?” সাবিনা বলল, “না না, আমি চাই নাই, আমার বাপ মা ছিল অশিক্ষিত আর গরীব । তাই এই আমাদের স্বামী পয়সাওয়ালা ছিল দেখে বিয়ে হইল । আমার, রেহানা আপার সেম অবস্থা । আর মালেকা আপাতো অশিক্ষিত দেইখা করছে, তাহেরা আপাতো ভালোবাইসা বিয়ে করছে ।” আবির ওপর নিচ মাথা নাড়ল । একটু পর রেহানা আরেকজন সাথে এনে বসালো । এই মহিলা রেহানার চেয়েও বয়স্ক । সুরুজ তালুকদারের সমান সমান বয়সেরই হবে । রেহানা মহিলাকে এনে সাবিনার পাশে বসিয়ে বলল, “আপনারা কথা কন, আমি কিছু নাস্তা লইয়া আসি ।” বলেই রেহানা যাওয়ার আগেই আবির বলল, “না না, বলেছেন এতেই ধন্যবাদ, আমি পরে একদিন সুরুজ  ভাইয়ের সাথে এসে খাবো, আপনাদের সাথে আজ কিছু কথা বলতে এসেছি আমি ।” রেহানা দাঁড়িয়ে গেলো । চেহারায় চিন্তার ছাপ পড়ে গেলো আবিরের কথা শুনে । অবশ্য সে ছাপ বাকিদের চেহারায়ও একই ছাপ স্পষ্ট । রেহানা জিজ্ঞেস করলো, “কি জিজ্ঞেস করবেন?” আবির বলল, “আপনি বসুন, আমি বলছি আপনাদের ।” রেহানাও মালেকা আর সাবিনার সাথে বসলো । আবির জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, আপনাদের স্বামীর প্রথম স্ত্রী, মানে ভার্সিটি  লাইফের প্রথম ভালোবাসা, তাহেরা, উনি তো আগুনে পুড়ে মারা গেছেন, তাইনা?” সবাই হালকা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালেও সাবিনা মাথা নাড়াতে নাড়াতে বলল, “হ্যাঁ, অ্যান্ড আনফুরচুনেটলি আমি সেদিন  বাপের বাড়ি ছিলাম ।” আবির বলল, “আমি কিন্তু জিজ্ঞেস করিনি কে কোথায় ছিলেন ।” সাবিনা মাথা নিচু করলো । আবির বুঝলো, এই মহিলা একটু বেশি ইংরেজি বলতে পছন্দ করে । তখন আবির মালেকার উদ্দেশ্যে বলল, “আপনি সেদিন কি করছিলেন?” মালেকা বলল, “মুই! কিতা কইরা মনে করি, আআআ!  অ হ! মনে পড়ছে! মুই তো হেই দিন মজিদ জাইলার বাড়ি গেসিলাম । ওর বউ আমেনার লগে কতা কইতে । আইয়া দেহি এই অবস্থা । আহারে! মেলা ভালা  আছিলো মাইয়াডা ।” আবির ওপর নিচ মাথা নাড়ল । তারপর রেহানাকে জিজ্ঞেস করলো, “আর আপনি?” রেহানা বলল, “আমি তো হেই দিন বাজারে গেছিলাম । তরকারি আনতে । আর বাড়িতে আইসা দেহি এই কান্ড ।” আবির ওপর নিচ মাথা নেড়ে কিছুক্ষণ কি যেন ভাবল । তারপর মালেকাকে জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, গতকাল তো আপনার মেয়ে রাহেলা মারা গেছে, না?” মালেকা কথা শুনেই রাহেলার নাম নিতে নিতে কান্নায় ফেটে পড়লো । যেন মেয়ে মাত্র চোখের সামনে মারা গেলো । আবির, “আ’ম সরি, কিন্তু আমায় কথা বলতেই হবে । আপনি শান্ত হন ।” মালেকার শান্ত হতে মিনিট পাঁচেক লাগলো । আবির তারপর জিজ্ঞেস করলো, “আপনি গতকাল আপনার মেয়ের মৃত্যুর সময় ছিলেন কোথায়?” মালেকা হালকা কান্নার স্বরে বলল, “কি যে কমু, গতকাইল গেসিলাম আমি বাজারে ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “আপনারা কি একেকজন একেকদিন বাজারে যান নাকি?” সাবিনা বলল, “নো, প্রায় এভরি টাইম রেহানা আপা-ই যায় । মাঝে মাঝে কিছু হলে আইদার আমি, অর মালেকা আপা যাই ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “মাঝে মাঝে কিছু হলে, মানে গতকালও  কিছু হয়েছিলো, যার জন্য গতকাল মালেকা ভাবি গিয়েছিলেন ।” রেহানা বলল, “জি, আসলে গতকাল আমার একটু ঠান্ডা লাগছিল, যার জন্য আমারে নিয়া ডাক্তারের কাছে গেছিলো ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “কোন ডাক্তার?”

 

আগামী পর্বেঃ

আবির তাতে নিজের ফোন নাম্বার লিখে দিয়ে বলল, “এটা আমার ফোন নাম্বার, কোন দরকার পড়লে কল করবেন ।” বলে বেড়িয়ে গেলো আবির । বাড়ির দরজা দিয়ে বেড়িয়ে উঠোন পেড়িয়ে প্রাচীরের গেইট দিয়ে বেড়িয়ে একটা রিকশা ডাকতেই হঠাৎ আবিরকে কে যেন ডাকলো । “ও ভাই! প্লিজ, একটু দাঁড়ান!” আবির তাকিয়ে দেখল, সাবিনা দাঁড়িয়ে ।