0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয়(২৫১)


পরিচয়(পর্ব-২৫১)(সিজন-৮)


আবির ওপর নিচ মাথা নাড়ল । সুরুজ তালুকদার পড়তে পড়তে নিজেকে সামলে নিলেন । চেহারায় উনার একটা দুশ্চিন্তার ছাপ । আবির একটা চেয়ার এনে সুরুজ তালুকদারকে বসাল । সুরুজ তালুকদার জিজ্ঞেস করলো, “তাহলে কি…… আমার ছেলেই আমার মেয়েকে খুন করেছে!” আবির বলল, “আমি আপনাকে আগেই বলেছি, এই অতুলই যে রাতুল, সেটা প্রমাণ হলেই আমি সত্যটা জানার একটা পথ খুজে পাবো । এখন শুধু অপেক্ষা আরেকটা ফোন কলের ।” এমন সময় একটা কল এলো আবিরের মোবাইলে । আবির হালকা হেসে বলল, “এই দেখুন, কল এসে গেছে ।” বলে কল ধরে কানে নিলো আবির । সুরুজ তালুকদার উঠে দাঁড়ালো । আবির বলল, “হ্যাঁ অপু । হুমম……আরে সাব্বাস! হ্যাঁ যে ঠিকানাটা দিয়েছিলাম সেখানে এসো । হুম । ওকে ।” সুরুজ তালুকদার জিজ্ঞেস করলো, “কে ফোন করেছিলো?” আবির বলল, “এতো তাড়াতাড়ি সবটা সমাধান হয়ে যাবে আমি ভাবতেও পারিনি ।” সুরুজ তালুকদার জিজ্ঞেস করলো, “মানে?” আবির বলল, “সবটা জানতে পারবেন, তবে তার জন্য আপনাকে আমার সাথে যেতে হবে ।” সুরুজ তালুকদার জিজ্ঞেস করলো, “কোথায়?” আবির বলল, “আপনার বাড়িতে ।”

রাত তখন ১১টা গ্রাম তখন গভীর ঘুমে মগ্ন । তবে সম্ভ্রান্ত সুরুজ তালুকদারের বাড়ি আলোয় আলোকিত । এখনও উঠোনের লাইট, ঘরের লাইট বন্ধ হয় নি । ভেতরে সব বসে দেখছে সিরিয়াল । এমন সময় দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজ । মালেকা বলল, “কিরে, বইয়া আছোস ক্যান? দ্যাখ না কিডা আইল!” রেহানা বলল, “এখন আমার পছন্দের সিরিয়াল চলতেছে, আমি এখন যাবো না । সাবিনা, তুই যাইয়া দ্যাখ ।” সাবিনা, “উফফফ! ইউ আর সো লেইজি!” বলে বিরক্ত মাখা চেহারায় ঘরের দরজা খুলে বেড়িয়ে উঠোন পেড়িয়ে গেলো প্রাচীরের দরজার কাছে । দরজা খুলতেই সাবিনার চক্ষু চড়কগাছ । দাঁড়িয়ে একদল পুলিশ, সাথে হাতখড়া পড়ানো অবস্থায় অতুল । সাবিনা তোতলিয়ে বলল, “পু…পু…পুলিশ!” একজন অফিসার বলল, “জীবনে প্রথম দেখলেন নাকি?” সাবিনা মালেকা আর রেহানাকে চেচিয়ে চেচিয়ে ডাকতে ডাকতে বলল, “মালেকা আপা! রেহানা আপা! দেখে যাও! কি হয়েছে! কুইক আসো!” রেহানা এসে সাবিনার পাশে দাঁড়ালো মালেকা অতুলকে দেখা মাত্রই দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে গেলো । রেহানা জিজ্ঞেস করলো, “একি! আপনেরা! কি করতে এসেছেন!” সাবিনা বলল, “লুক! এই অতুল ছেলেটাও আছে! এই ছেলে একটা ঝামেলা করবে জানতাম ।” রেহানাও তাল মিলিয়ে চেচিয়ে চেঁচিয়ে বলে উঠলো, “ওরে! সে তো আমিও বারন করেছিলাম বাইরের ছেলে পেলেকে ঘরে এনো না! আমার তো মনে হয় রাহেলাকে এই-ই মেরেছে ।” আরও নানান কথা বার্তা বলে চ্যাঁচামেচি শুরু হয়ে গেলো । সেই চ্যাঁচামেচি শুনে আশেপাশে অনেক গ্রামবাসী জড়ো হল সুরুজ তালুকদারের বাড়ির সামনে । এরই মধ্যে একটা আওয়াজ এলো, “ভেতরে ঢুকতে দেয়া হবে না বুঝি!” রেহানা সাবিনা আর মালেকা প্রাচীরের দরজার দিকে তাকাল । দাঁড়িয়ে আবির যাদের এরা সাকিব নামে চেনে । রেহানা জিজ্ঞেস করলো, “আরে সাকিব ভাই? আপনি?” আবির ভেতরে ঢুকে বলল, “উহু, সাকিব নই, আমি আপনাদের মন গলাতে ছদ্মনাম নিয়েছিলাম আর কি । আমি আবির । সালমান খান আবির । দ্যা ইনভেস্টিগেশন শো দেখেছেন?” সাবিনা বলে উঠলো, “আরে হ্যাঁ! আমি দেখেই সন্দেহ করেছিলাম! কিন্তু দাঁড়ি মোচ হওয়ায় আর ছদ্মবেশ ধারণ করায় আমি আমার সন্দেহকে ভুল ভেবেছিলাম ।” আবির বলল, “ধন্যবাদ ভাবি । তবে, প্রশংসাটা একটু পরে করবেন, আসলে এখানে দ্যা ইনভেস্টিগেশন শো এর একটা লাইভ অনুষ্ঠান দেখবেন তো ।” সাবিনা ভয়ের সহিত জিজ্ঞেস করলো, “লাইভ শো মানে!” আবির বলল, “একটু অপেক্ষা করুন, বুঝতে পারবেন । তার আগে আমি ঘটনার ভুক্তভোগীকে ডেকে আনি ।” বলে আবির ডেকে উঠলো, “কই? আসুন!” ভেতরে এলো সুরুজ তালুকদার । সবাই নিজের স্বামীকে দেখে অবাক হয়ে গেলো । রেহানা জিজ্ঞেস করলো, “ওগো! শেষ মেশ তুমি আমাদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করলে!” আবির রেহানাকে জিজ্ঞেস করলো, “উনি তো একবার-ও বলেননি উনি” আপনাদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছেন, আপনি এতো ভয় কেন পাচ্ছেন?” রেহানা চুপ হয়ে গেলো । আবির পুলিশ অফিসারের দিকে তাকিয়ে বলল, “অফিসার, আপনি ভেতরে আসুন ।” অফিসার বাকি পুলিশদের সাথে নিয়ে ভেতরে এলো । গ্রামবাসীদের অনেকেই এসে জুটল সেখানে । আবির তখন সবাইকে বলল ওর তদন্তের কথা, কিভাবে সুরুজ তালুকদারের সাথে দেখা, কিভাবে এবাড়িতে আসা, সেইন্ট মার্টিনে অতুলকে দেখা এবং অতুলই যে রাতুল সেটা প্রমাণ করা । সুরুজ তালুকদার জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, তুমি তো বললে রাতুল ভীরের পালিয়েছিল, কিন্তু পড়ে ওকে ধরলে কি করে?” আবির বলল, “আমি দেখেছিলাম রাতুল জাহাজে কার সাথে যেন কথা বলছিল । ভেবেছিলাম সে জাহাজে করে চলে যাবে, কিন্তু না, সে হয়তো কিছু কাজের জন্য জাহাজে উঠেছিলো, কাজ শেষে নেমে এসেছিলো । তাকে পড়ে সেইন্টমার্টিনে দেখতে পেয়ে ওর সাহায্যে আমি ধরে ফেলি রাতুলকে ।” একজন গ্রামবাসী বলল, “আমরা মুরুক্ষু মানুষ বাবা, আমাগো গেরামে এইরহম নাম করা একখান মানুষের বাড়িত দুইখান মানুষ খুন হইল । এইবার তুমি কও বাবা, আসল দোষী কেরা?” আবির বলল, “অবশ্যই, তবে তার আগে সবার সামনে আরেকটা চমক দেখাতে চাই ।” সুরুজ তালুকদারের ভ্রু কুঁচকে গেলো । জিজ্ঞেস করলো, “চমক! কি চমক?” আবির অফিসারের দিকে তাকিয়ে কি যেন ইশারা করলো । অফিসার তখন দুজন মহিলা পুলিশকে ভেতরে আসতে বলল । দুজন মহিলা পুলিশ হাতখরা পড়িয়ে যাকে নিয়ে এলো, তাকে দেখে সকলেই অবাক । দাঁড়িয়ে আছে সুরুজ তালুকদারের স্ত্রী, সেই ভালোবাসার স্ত্রী, তাহেরা ।

 

আগামী পর্বেঃ

মালেকা তখন জিজ্ঞেস করল, “তারপর কি হইলো বাবা?” আবির বলল, “এরপর একদিন হঠাৎ এই রাতুল, অতুল নামে হাজির হয় এই বাড়িতে । কিন্তু বোকা বানায় মালেকা আপাকে ।” বলেই আবির মালেকার দিকে তাকাল । মালেকা ভ্রু কুচকে ভয় নিয়ে আবিরের দিকে তাকাল ।