0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয়(২৪৮)



পরিচয়(পর্ব-২৪৮)(সিজন-৮)

 

আবিরও লোকটার সাথে তাল মিলিয়ে হালকা হাসল ।

রুমে ফিরে আবির দেখল, চয়নিকা মোবাইলে ওর মায়ের সাথে কথা বলছে । আবির রুমে ঢুকতেই চয়নিকা ওর মা-কে বলল, “এসেছে, তোমার জামাই দুনিয়া উদ্ধার করে এসেছে ।” আবির ধীরে ধীরে এগিয়ে যেয়ে বিছানায় বসলো । চয়নিকা মায়ের কাছে বিদায় নিয়ে উঠে বসে বলল, “কি মিস্টার কাপুরুষ?  কাজ হয়েছে?” আবির বলল, “জি কামহিলা হয়েছে ।” চয়নিকা বলল, “তা এবার আমার কথা শুনবেন?” আবির জিজ্ঞেস করলো, “কি?” চয়নিকা বলল, “আমি সেইন্টমারটিন যাবো । নিয়ে যাবে?”

“ঠিক আছে, যাবো একদিন ।” বলল আবির ।

“না, কালই যাবো প্লিজ!” অনুরোধ করে বলল চয়নিকা ।

“উমম! আচ্ছা, কাল-ই যাবো । খুশি?”

“ইয়ে!!! থ্যাঙ্ক ইউ!” খুশির সাথে বলে আবিরকে জড়িয়ে ধরল চয়নিকা ।

বিকেলের কথা । আবির সুরুজ তালুকদারের ঘরের দরজায় নক করে বলল, “আসতে পারি?”

ভেতর থেকে আওয়াজ এলো, “জি অবশ্যই ।” দরজা খুলে আবির সুরুজ তালুকদারকে সালাম দিলো, “আসসালামু আলাইকুম ।” সুরুজ তালুকদার বলল, “ওয়ালাইকুমুস সালাম । বসো ।” আবির একটা চেয়ারে বসলো । সুরুজ তালুকদার জিজ্ঞেস করলো, “হঠাৎ এই সময়, সব ঠিক থাক তো?” আবির বলল, “জি সব কিছু ঠিকঠাক । শুধু আপনার পরিবার সম্পর্কে একটু জানতে এলাম ।”

“অবশ্যই, বলুন, কি জানতে চান ।” বলল সুরুজ তালুকদার ।

আবির জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, আপনার পরিবারের সবার পরিচয়পত্র, কিংবা কোন অ্যাচিভমেন্টের সার্টিফিকেট বা এই টাইপ কিছু আছে কি আপনার কাছে?” সুরুজ তালুকদার বলল, “অবশ্যই, বাড়ির সবার পরিচয়পত্রের ফটোকপি, সবার পড়াশুনার সার্টিফিকেট এগুলো আমি সাথে নিয়ে রেখেছি । আসলে বলেছিই তো, আমি বাসায় থাকি না এখন তেমন একটা, তাই এগুলোর কোনটা কখন যে কাজে লেগে যায়, তাই নিজের কাছে রেখে দিয়েছি আমি ।” বলেই সুরুজ তালুকদার খাটের পাশে রাখা নিজের ব্যাগটা নিয়ে সেখান থেকে একটা বড় ফাইল বের করে সামনে রাখল । ফাইলের মধ্যে এতো কাগজ, যে ফাইলটা মোটা হয়ে একপাশ ছিঁড়েও গেছে । সুরুজ তালুকদার ফাইল থেকে কাগজ বের করে দিতে লাগলো । প্রথমে কয়েকটা কাগজের পাতা দিয়ে বলল, “এই যে, এগুলো আমার চার বউয়ের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি ।” আবির সেগুলো দেখতে লাগলো । একটু পর আবার কিছু কাগজ দিয়ে বলল, “এগুলো আমার ছেলে আর মেয়ের বার্থ সার্টিফিকেট ।”  আবির সেগুলো দেখতে লাগলো । এরপর আরও অনেক কাগজ দেখতে লাগলো, সুরুজ তালুকদারও একে একে  আবিরকে দিতে লাগলো কাগজগুলো । সুরুজ তালুকদার কাগজগুলো দেয়ার সাথে সাথে আবিরকে বলতে লাগলো এই কাগজের পেছনের ইতিহাস । আবির কান দিয়ে সেসব কথা শুনছিলো, আর চোখ দিয়ে কাগজগুলো দেখছিল । দেখতে দেখতে হঠাৎ কানে ওর সুরুজ আওয়াজ আসা বন্ধ হয়ে গেলো । আবির সুরুজ তালুকদারের  দিকে তাকাল । দেখল, ব্যাগ থেকে কি এক কাগজ বের করে হাতে নিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন সুরুজ তালুকদার । আবির জিজ্ঞেস করলো, “কি হয়েছে?” সুরুজ তালুকদার কিছু বলল না । হাতের কাগজটা আবিরের দিকে এগিয়ে দিলো । আবির সেটা নিয়ে দেখল, একটা ছবি । বছর ১০-এর একটা ছেলে মেঝেতে খালি গায়ে হাফ প্যান্ট পড়ে বসে আছে, ওর পেছনে শুয়ে জোয়ান সুরুজ তালুকদার । ঠোঁটে আনন্দের হাসি । সুরুজ তালুকদার বলল, “এ দিন ছেলে আমার স্কুল থেকে এসে বলেছিলো, ও স্কুলের সাতার প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে । আমি খুশি হয়ে এলাকার এক ক্যামেরাম্যানকে ডেকে ছবিটা তুলেছিলাম । ক্যামেরা তো তখন তেমন একটা প্রচলন ছিল না ।” আবির দেখল, সুরুজ তালুকদারের চোখ ছলছল করছে । আবির ছবিটার দিকে তাকাল । খেয়াল করলো, সুরুজ তালুকদারের ছেলে রাতুলের বুকের মাঝামাঝি একটু ডানে একটা কালো দাগ । আবির জিজ্ঞেস করলো, “এটা কি জন্মদাগ?” সুরুজ তালুকদার ওপর নিচ মাথা নাড়ল । আবির পকেট থেকে মোবাইল বের করে ছবিটার একটা ছবি তুলে নিলো । সুরুজ তালুকদার আবার একেকটা কাগজ বের করে আবিরকে দিতে লাগলো । তবে এখন আর আগের মতো কাগজের পেছনের ইতিহাস বলল না ।

মাগরিবের নামাজ পরে নিজের ঘরে ঢুকল আবির । চয়নিকা চুল আঁচড়াচ্ছে । আবিরকে জিজ্ঞেস করলো, “কোথায় গিয়েছিলে?” আবির বিছানায় বসে বলল, “এইতো, গিয়েছিলাম এক জায়গায় । তুমি কি করছ?” চয়নিকা বলল, “এইতো, চুলে জট লেগেছে, তাই ছাড়িয়ে নিলাম । কাল তো সেইন্টমার্টিন যাবো, তাই ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “দুপুরে মা কি বলছিল?” চয়নিকা চিরুনিটা রেখে আবিরের দিকে ঘুরে বসে জিজ্ঞেস করলো, “হঠাৎ?” আবির হালকা হাসিমুখে বলল, “না, তখন জিজ্ঞেস করতে ভুলে গিয়েছিলাম তো, তাই এখন জিজ্ঞেস করলাম ।” চয়নিকা বলল, “কি আর বলবে, আমরা কবে ফিরছি, কেমন আছি,  এখানে এসে কেমন লাগছে, এগুলোই ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “কবে আসবেন মা?” চয়নিকা বলল, “এইতো, সামনের সপ্তাহেই আসবে । আজ তো বুধবার, সামনের মঙ্গলবারে আসবে বলল ।” আবির বলল, “ও ।” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “আমরাও তো সামনের সপ্তাহেই যাচ্ছি, তাই না?” আবির বলল, “হুম, কাজ শেষ হলে সামনের সপ্তাহের রবিবারেই চলে যাবো ।” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “কাজ শেষ হলে মানে?” আবির বলল, “এইযে, তোমার আর আমার ঘোরাঘুরির কাজ শেষ হলে ।” চয়নিকা হালকা হেসে বলল, “ও ।”

 

আগামী পর্বেঃ

আবিরের চোখ আটকে গেলো একটা মানুষের দিকে । একটা কালো স্যান্ডো গেঞ্জি পড়ে একটা জাহাজের ওপর থাকা কাউকে কি যেন বলছে । কিন্তু সবচেয়ে বেশি যে ব্যাপারটা আবিরের খটকা লাগলো তা হল, এটা অতুল । লঞ্চ থেকে নামলো আবির । খানিক পর অতুল একটা গাছের গোঁড়ায় থাকা ব্যাগের কাছে গেলো । সেই তারপর গায়ে থাকা স্যান্ডো গেঞ্জিটা খুলে ব্যাগে রাখল । পড়নে থাকা কাল প্যান্ট খুলে ব্যাগে রাখল । ভেতরে একটা হাফ প্যান্ট ছিল ।কি একটা ব্যাপার আবিরের মনে একটা সন্দেহের সৃষ্টি করলো ।  অতুল গায়ে গামছে জড়িয়ে সাগরের জলের দিকে যাচ্ছিলো, সেই  সময় আবির এসে অতুলের সামনে দাঁড়িয়ে গায়ের গামছাটা কেড়ে নিলো ।