0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব ২৪৪


পরিচয়(পর্ব-২৪৪)(সিজন-৮)


আবির আর চয়নিকা খাওয়ার জন্য রেস্টুরেন্টে গেলো । খাবার টেবিলে বসে আবির খাওয়ার সময় খেয়াল করলো সকালের সুরুজ খেতে আসছে । আবির খাওয়ার ফাকে লোকটাকে দেখছিল । আবার লোকটার ভেতর টেনশন ঢুকে পড়েছে । খেতে বসলো লোকটাও, সেই সকালের মতো করেই খাচ্ছে । খেতে খেতে এখন আবার মাঝরাত না বানিয়ে দেয় ।

খাওয়া শেষে আবির চয়নিকাকে বলল, “তুমি রুমে যাও, আমি আসছি ।” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “কোথায় যাবে তুমি আবার এই রাতের বেলা?” আবির বলল, “আরে এদিকে আমার এক পরিচিত লোক  আছে, তার সাথে একটু দেখা করবো ।” চয়নিকা, “তাড়াতাড়ি আসবা কিন্তু!” বলে চলে গেলো । আবির, “আচ্ছা” বলল শুধু, আর কিছু বলল না । তারপর চয়নিকা চোখের আড়াল হতেই আবির যেয়ে বসলো সুরুজ তালুকদারের সামনে একটা চেয়ারে । বসেই আবির লোকটাকে সালাম দিলো । লোকটা বলল, “ওয়ালাইকুমুস সালাম! কেমন আছো?” লোকটার ঠোঁটে জোর করে আনা হাসিটা দেখল আবির । আবির বলল, “আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালো, আপনি?” সুরুজ তালুকদার বলল, “কেমন আর থাকবো বলো, সেই টেনশনে ।” আবির বলল, “আচ্ছা, আমি ভেবে দেখলাম, কাল সকালে একবার আপনার বাড়িতে যাবো ।” সুরুজ তালুকদার ভাতের লোকমা মুখে দিতে যেয়ে আবিরের কথা শুনে আবার প্লেটে রেখে খুশি মনে বললেন, “সত্যি যাবে!” আবির বলল, “জি, ইনশাল্লাহ! আপনার কাছে অ্যাড্রেসটা জানতে এলাম ।” লোকটা আবিরকে তার বাসার অ্যাড্রেস জানিয়ে দিলো । আবির তারপর লোকটার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিজের রুমের দিকে হাঁটা ধরল । রেস্টুরেন্ট থেকে বেরনোর সময় একবার পেছনে তাকিয়ে দেখল, লোকটা মন থেকে টেনশন চলে গেছে । খাওয়ার গতি আগের চাইতে বেড়ে গেছে এখন ।

রাত ৩টার দিকের কথা । চয়নিকা আর আবির শুয়ে আছে । আবির ঘুমিয়ে গেলেও চয়নিকা এখনও ঘুমোয় নি । চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে । একবার এপাশ, একবার ওপাশ ফিরছে । জানালাটা খোলাই ছিল, গরম পড়েছে খুব আজ । হঠাৎ একটা দমকা হাওয়ায় পর্দা নড়ে উঠলো । বাতাসে জানালা কেপে ওঠার একটা আওয়াজও শুনলো । চয়নিকার চোখ খুলে গেলো । উঠে বসলো । জানালা দিয়ে একবার বাইরের দিকে তাকাল । কেউ নেই, তবে একটু দূরে আগুনের গোলা মতো কিছু দেখা যাচ্ছে, কেউ হয়তো নাইট পার্টি করছে । বাতাস এখন আর বইছে না । খাটের পাশে থাকা সাইড টেবিলে পানি রাখা ছিলো । খেয়ে নিলো পানি । তারপর আবার কি করতে জানালার কাছে দাঁড়ালো । শিরশির করে বাতাস বওয়া শুরু করেছে । চয়নিকা আবার শোবার জন্য যেই পা বাড়াবে, অমনি একটা আওয়াজ ওর কানে এলো । বাথরুমে কে যেন কাঁদছে । চয়নিকার বুক কেপে উঠলো । ধীরে ধীরে পেছন ফিরে বাথরুমের দরজার দিকে তাকালো, হাওয়ায় হালকা দুলছে । চাপানো, তবে ছিটকিনি দেয়া নেই । চয়নিকা আবিরকে ডাকলো, “আবির! এই আবির!” আবির উঠলো । ঘুম জড়ানো চোখে জিজ্ঞেস করলো, “কি হয়েছে?” চয়নিকা বলল, “দ্যাখো, বাথরুমে কে যেন কাঁদছে!” আবির কান পাতলো । সাইডটেবিল থেকে চশমাটা নিলো । তারপর বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালো । চয়নিকা আবিরের হাত ধরে বলল, “যেয়ো না আবির!” আবির ঠোঁটের সামনে তর্জনী আঙ্গুল ধরে ফিসফিসিয়ে বলল, “শ্‌শ্‌শ্‌……! কথা বোলো না!” চয়নিকা চুপ করলো । আবির বাথরুমের দিকে তাকাল । চয়নিকা খাটের ওপর উঠে একদম কোণায় বসে গায়ে কাথা জড়িয়ে নিলো । আবির ধীরে ধীরে বাথরুমের দিকে এগোচ্ছে । প্রায় কাছাকাছি যখন যাবে, আওয়াজটা তখন বন্ধ । পেছন ফিরে চয়নিকার দিকে তাকাল । বলল, “কোথায়, কিছুই তো নেই?” চয়নিকা বলল, “আরে আওয়াজ হল তো! তুমিও তো শুনলে!” আবির বলল, “আচ্ছা, আবার আওয়াজ হলে দেখবো ।” বলে বিছানায় যেই না শুতে যাবে, অমনি আবার আওয়াজ শুরু । আবির আবার বিছানা থেকে উঠে বসলো । চয়নিকা বলতে যাবে, “লাইটটা……।” অমনি আবির, “শ্‌শ্‌শ্‌……।” বলে বাথরুমের দরজার দিকে পা বাড়ালো । চয়নিকা মনে মনে দোয়া পড়ছে । আবির ততোক্ষণে বাথরুমের দরজার কাছে পৌঁছে গেছে । চয়নিকা কাথার ভেতর নিজেকে একদম ঢুকিয়ে নিলো । পুরো শরীর ঢেকে ফেলেছে, শুধু একটুখানি ছিদ্র দিয়ে আবিরকে দেখছে । আবির বাথরুমের দরজার দিকে হাত বাড়ালো । পুরনো দরজায় জং ধরলে খোলার সময় যেরকম একটা আওয়াজ হয়, ঠিক সেরকমই একটা আওয়াজ করতে করতে ধীরে ধীরে দরজা খানিক খুলল । একটু খুলতেই আবির ভেতর উঁকি । দিলো যেই না আবির ভেতরে তাকাল, অমনি একটা গোঙানির আওয়াজ করে বাথরুমে থেকে সরে এসে মাটিতে পড়ে জ্ঞান হারালো । চয়নিকা কেদে চিৎকার করে উঠলো, “আবির!” কিন্তু আবির শুনছে না । সেই কান্নার আওয়াজ আরও বেড়ে গেছে । সেই সাথে জানালা দিয়ে বাতাসও বইতে শুরু করেছে খুব । চয়নিকা উঠে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল, যারা নাইট পার্টি করছিলো, তাদের কাছে সাহায্য চাওয়া যাবে, কিন্তু না । চয়নিকা দেখল, কেউ নেই সেখানে । চয়নিকার মাথায় একটা বুদ্ধি এলো । লাইট জ্বালিয়ে দেবে । কিন্তু সমস্যা হল লাইটের সুইচ তো বাথরুমের পাশেই, যদি সেই সময় বাথরুমের দরজা খুলে যায় আর ভয়ংকর কিছুর আবির্ভাব হয়! যা হয় হবে, আগে চয়নিকাকে লাইট জালাতেই হবে । চোখ বন্ধ করে দোয়া পড়ে বাথরুমের দরজার দিকে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে লাগলো চয়নিকা ।


আগামী পর্বেঃ

আবির প্রাচীরের দরজায় নক করলো । একটু পর ভেতর থেকে আওয়াজ এলো । “এ কেডারে?” আবির গলা খাখরে বলল, “আমি সাকিব ।” ছদ্মনাম ধারণ করলো আবির । মহিলা বলল, “আপনি ক্যান আইছেন?” আবির বলল, “আসলে, আমি একসময় পুলিশ ছিলাম তো, আপনার এই কেস নিয়ে কথা বলতাম যদি কোন সমস্যা না থাকে ।” “পুলিশ!” মহিলার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো । হালকা ভয় পেয়েছে বোধ হয় ।