পরিচয় পর্ব -২৩৯
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjK3Lsm9YRLwWLMFke0YF5pWdhuT5JdT_KFI4hvwBtIzmAGNSIiIPxkgJ6gWPOe423P2XcO1k1uMCIJiajfsY8W0Hs-AHKyRB6cd5BHx04LaNCDuiG3LspHB7CNtx0xA6Z1iDR-5yhtrKM/w640-h361/s8.jpg)
পরিচয়(পর্ব-২৩৯)(সিজন-৮)
আবির
আর চয়নিকা আঁখি আর সাবিতের সাথে কথা বলতে লাগলো ।
পরদিন
সকালের কথা । সাড়ে ৯টার দিকে এয়ারপোর্ট-এ বসে আবির আর চয়নিকা । দুজনেই বসে মোবাইল চালাচ্ছে
। বিমানে উঠবে ৯টা ৪৫-এর দিকে । এমন সময় আবিরের হোয়াটস অ্যাপ-এ অয়নের ভিডিও কল এলো । আবির কল ধরল । ফোনের ওপাশ থেকে
অয়ন হয়রান অবস্থায় বলল, “ও দুলাভাই! এ কাকে আমার কাছে দিয়ে গেলে!” আবির জিজ্ঞেস করলো,
“কেন, কি হয়েছে?” সেই সময় ক্যামেরার সামনে এলো নিশান । এসেই বলে উঠলো, “বাবা!” নিশানের
ডাক শুনে চয়নিকাও ক্যামেরার সামনে এলো । অয়ন বলল, “দ্যাখো আপু! তোমার ছেলেকে নিয়ে যাও
নি দেখে কি শুরু করেছে!” চয়নিকা বলল, “নিশান! দুষ্টুমি করিস না! ১সপ্তাহেরই তো ব্যাপার,
চলে আসবো ।” নিশান বলল, “উহু! তোমরা ১ সপ্তাহের জন্যই যাও কি ১ মাসের জন্য কি ১ দিনের
জন্য, দ্যাট ডাজেন্ট মেটার! তোমরা আমাকে নিয়ে
যাও নি কেন এটাই আসল কথা । এখন আমি মামাকে খুব জালাব ।” অয়ন বলল, “ভাই! তুমি
কিছু বলবে না?” আবির বলল, “কি আর বলবো! শুনেছি মামা ভাগ্নে যেখানে, আপদ নেই সেখানে,
আর এখানে তো দেখছি মামা ভাগ্নেই আপদ বাঁধিয়ে রেখেছে!” অয়ন বলল, “একে তো কষ্ট তোমরা
আমাকেও নিয়ে যাও নি! তার ওপর তোমাদের এই ছেলে আমাকে জ্বালিয়ে খাচ্ছে!” আবির বলল, “আচ্ছা,
তোর চেয়ে ছোট তো, এমন একটু করবেই ।” অয়ন বলল, “ছোট! ক্লাস ফাইভে পড়ে আর ছোট! এ তুমি
আমায় কি শোনালে ভাই!” এমন সময় কোত্থেকে মাইশা এসে অয়নের পিছে নিশানের হাত ধরে দাঁড়ালো
। অয়ন প্রথমে না বুঝতে পেরে বলে উঠলো, “দেখেছো! এখন মাইশার হাত………………মাইশা!” বুঝতে
পেরে পেছন ফিরে তাকাল । হালকা লজ্জাও পেয়ে গেলো । আবির আর চয়নিকা হেসে উঠলো । আবির
বলল, “কি, তোর গার্লফ্রেন্ড এসে গেছে!” অয়ন বলল, “ভা…ভা…ভা…ভা…ভা…ভা…ই! রা…রা…রা…খছি!”
বলে ফোন কেটে দিলো অয়ন ।
১০টার
দিকে প্লেন ছাড়ল । আবির আর চয়নিকা এখন মাটি থেকে কয়েক হাজার ফিট ওপরে । জানালার পাশে
চয়নিকা, আর আবির চয়নিকার পাশে । একটু পর একজন এয়ার হোস্টেস এসে আবিরকে জিজ্ঞেস করলো,
“হ্যালো স্যার, ডু ইউ নিড সামথিং টু ইট?” সবাইকেই একে একে জিজ্ঞেস করার পর আবিরের কাছে
এসেছেন এই এয়ার হোস্টের । আবির “থার্টি সেকেন্ডস প্লিজ!” বলে চয়নিকাকে জিজ্ঞেস করলো,
“চুনি, কিছু খাবে?” চয়নিকা বলল, “না ।” আবির এয়ার হোস্টেসকে বলল, “নো, থ্যাংকস এ লট
।” এয়ার হোস্টেস অন্যান্যদের জিজ্ঞেস করতে গেলো । এয়ার হোস্টেস মহিলাটি ওদের থেকে একটু
দূরে যাবার পর আবির চয়নিকাকে জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, তোমায় একটা প্রশ্ন করি, এই এয়ার
হোস্টেসকে দেখে তুমি বলতে পারবে, ইনি বাংলাদেশী নাকি বিদেশি?” চয়নিকা ভ্রু-কুঁচকে জিজ্ঞেস
করলো, “এ আবার কেমন কথা, এগুলো আবার চোখের দেখায় বোঝা যায় নাকি?” আবির বলল, “অবশ্যই
যায়, এই যে উনি ইংরেজি বললেন, সেটা শুনে বুঝতে পারো নি?” চয়নিকা বলল, “বললেন তো ভালোই, হয়তো তাহলে বিদেশী ।” আবির বলল, “হুম,
এটা সত্য উনি বিদেশী, কিন্তু উনার মাতৃভাষা কিন্তু ইংরেজী না । আবার উনি যে দেশি, উনার
মা-বাবা কিংবা তার পূর্বের বংশধর সে দেশি না ।” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “কি করে বুঝলে?”
আবির বলল, “উনার নেমপ্লেটে ইংরেজিতে লেখা ছিল উনার নাম, কিম বং ছা । কিম কিন্তু বেশিরভাগ
কোরিয়ানদের নাম । এ থেকে ধারণা করা যায় উনি হয়তো কোরিয়ান ।” চয়নিকা হেসে উঠে বলল,
“উনার চেহারা দেখে তোমার কি মনে হয় উনি কোরিয়ান?” আবির বলল, “সে জন্যই তো বললাম, উনার
বংশধর হয়তো উনার দেশের অর্থাৎ কোরিয়ান না ।” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “যদি কোরিয়ান না
হন?” আবির বলল, “আমি তো বলিনি উনি আসলেই কোরিয়ান ।” চয়নিকা বিরক্ত হয়ে বলল, “আরে, চোখের
দেখায় শতভাগ সেটা সত্যি বলা যায় না, বেশিরভাগ সত্যি ধরে নেয়া যায় । তাই বলে যে অল্প
সম্ভাবনা থাকে তাও যে হতে পারে না তা কিন্তু নয় ।” চয়নিকা বলল, “হয়েছে, আমার গোয়েন্দা
হবার ইচ্ছেও নেই, তোমার এসব আজাইরা কথাবার্তা শোনার-ও ইচ্ছে নেই ।” বলে জানালা দিয়ে
বাইরের দিকে তাকাল চয়নিকা । আবির সিটের সাথে হেলান দিয়ে বসলো । প্লেনে উঠেছে প্রায়
৪০ মিনিট মতো হয়েছে, পৌছতে বেশিক্ষণ লাগবে না । এরই মধ্যে আবির শুনতে পেলো, বিমানে
ইংরেজিতে এরকম একটা ঘোষণা দিচ্ছে, “বিমান কক্সবাজার এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেছে, বিমান এখনই
ল্যান্ড করবে । আপনারা সিটবেল্ট বেধে বসুন ।” কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমান ল্যান্ড করলো
। বিমান থেকে নামলো আবির আর চয়নিকা । বেশ বাতাস । চয়নিকা বলল, “দেখেছো, নামার সাথে
সাথেই কি সুন্দর বাতাস!” আবির বলল, “হুম, কক্সবাজারের বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে ।” চয়নিকা
জিজ্ঞেস করলো, “তুমি বুঝলে কি করে? বাতাসের নেমপ্লেট দেখলে নাকি?” আবির বলল, “না, এটা
কল্পনা ছিল, আর বাতাস তো সারা পৃথিবী জুড়েই বইতে থাকে, এইখানকার বাতাসের কোন না কোন
পরমানু কোন একদিন কক্সবাজারে ছিল, নাকি!” চয়নিকা বিরক্ত হয়ে বলল, “আবার শুরু করলো কাপুরুষটা!”
আবির বলল, “তবে হ্যাঁ, তোমায় দেখে একটা ব্যাপার শিওর হয়ে বলতে পারি!” চয়নিকা জিজ্ঞেস
করলো, “কি?” আবির বলল, “তুমি একটা কামহিলা ।” বলেই হো হো করে হেসে উঠলো । চয়নিকা বিরক্ত
হয়ে বলে উঠলো, “অসহ্য!”
আগামী
পর্বেঃ
রুমে
কাছে এসে দাঁড়াতেই দেখল, বয়স্ক লোকটাও এসে দাঁড়িয়েছে । আবির দরজা খুলতে যাবে, এমন সময়
বয়স্ক লোকটা বলল, “এক্সিউজ মি, এটা আমার রুম ।” আবির দরজা না খুলে লোকটাকে বলল, “বাট
এটা তো আমরা বুক করছি ।” লোকটা বলল, “কেন, এই যে, আমার চাবির ওপরে লেখা, আটাশি!”