0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

সবখানে গণ্ডগোল

 সবখানে গন্ডগোল
লেখকঃ সাদাত আলম প্রতীক


সকাল 10 টা বাজে। রুম্পা আর রকিবের একমাত্র ছেলে, হাসিব কোচিং থেকে ফিরছিল । হঠাৎ  ওর বন্ধু জাকির পেছন থেকে ডাক দিলো। জাকির  হাসিবের কাছে আসলো। ওর হাতে একটা  মুরগি ছিল ।
জাকির: দেখ দোস্ত, আজকে আমার খালামনি আর খালু আসবে । তাই মুরগি টা কিনলাম।
হাসিব: তো আমি কি করবো কুত্তা!!!!
জাকির: তোর এত্তো বড় সাহস, আমাকে কুত্তা বললি!!!
হাসিব "হ" বলে যেই উলটো দিক থেকে জাকির কে লাথি মারতে গেলো, অমনি জাকির হাসিবের পা ধরে দিলো এক টান। হাসিব মুখ থুবরে পড়লো। তারপর উঠে বাড়ির দিকে দিলো এক দৌড়, জাকিরও বাড়ি চলে এলো। 
জাকির: মাম্মা, তোমার মুরগি এনেছি । নাও।
জেসি(জাকিরের মা): দে বাবা। এবার আমার বোন আসবে। আর আমি বোনের বাড়ি চলে যাবো। তারপর আরেকটা বিয়ে করে তার সম্পত্তি ও হাসিল করে  নেবো । 
জাকির: কি বলছো বিড়বিড় করে?
জেসি: না। কিছু বলিনি তো।
ঘরের মধ্যে তখন রুম্পা, রকিব আর হাসিব ঢুকলো।
রকিব: বলবো তো এবার আমরা।
জেসি: একি। আপনারা, আসুন, আসুন। ভেতরে আসুন ।
রুম্পা: এখন আর আদিক্ষেতা দেখানো লাগবে না। আপনার ছেলে আমার ছেলের কী অবস্থা করেছে দেখুন ।
জেসি: এই জাকির, সরি বল।
জাকির: কেনো সরি বলবো, ও আমাকে কুত্তা বলেছে। তারপর লাথি মারতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে গেছে। আমার কী দোষ? 
জেসি: কি!!! এত্তো বড় সাহস, আমার ছেলের গায়ে হাত তোলা!!!!
মেসি(জাকিরের বাবা): কি হলো, এতো গন্ডগোল কিসের?
রকিব: তুই চুপ থাক । তুই তো আরেকটা বিয়ে করে বসে আছিস।
জেসি: কি!!! তুমি আরেকটা বিয়ে করেছো?
মেসি: না...মানে.....ইয়ে মানে.......
জেসি কান্নাকাটি শুরু করে দিলো। এমন সময় জাকিরের খালা আর খালু  , আলভী আর অলিভিয়া এলো।
অলিভিয়া: কি হয়েছে বোন আমার, কাদছিস কেনো?
জেসি: দেখো না আপু, মেসি আমাকে ছেড়ে আরেকজনকে বিয়ে করেছে।
আলভী: কি!!! এত্তো বড় সাহস, আমার স্ত্রীর বোনকে কষ্ট দেয়া!!!!
মেসি: আপনি চুপ থাকেন। আপনি তো শশুরের জমিজমা সব চুরি করে নিয়ে বসে আছেন ।
অলিভিয়া: কি তুমি বাবার জমি চুরি করেছো?
আলভী: না......মানে......ইয়ে......
অলিভিয়া: দাঁড়াও, আমি এখনি বাবাকে বলছি [মোবাইলে কল দিয়ে] হ্যালো বাবা?
জলিল(বাবা): হ্যালো, ভালো আছোস মা?
অলিভিয়া: না বাবা । তোমার জামাই, আলভী তোমার সব জমিজমা চুরি করেছে, জানো?
জলিল: এইডা কি শোনাইলি মা। আমার লগে জামাই এইভাবে প্রতারণা করলো!!!
অলিভিয়া: মাকে ফোনটা দাও । মা কে জানাই।
আলভী: তোমার মাকে কি জানাবা। উনিই তো আমার জমি চুরি করার পার্টনার ।
জলিল: কি!! ফোনটা রাখ মা। পরে কথা বলি [ফোনটা রেখে] এই জুলি(অলিভিয়ার মা), এইদিকে আসো।
জুলি: কি হইল ডাকতাসো ক্যান ?
জলিল তুমি কোন সাহসে আমার জমি চুরি করসো?
জুলি: ভালো হইসে, ভালো করসি।
জলিল: কি, আবার মুখে মুখে কথা!!!!
হঠাৎ পাশের বাড়ির কালাম এলো। 
কালাম: কি হইলো আপনাগো, এই বয়সে ঝগড়া আপনাগো মানায়?
জুলি : আপনে চুপ থাকেন। আপনার বউ যে আপনার পকেট থেইকা ট্যাকা চুরি করে তা জানেন?
কালাম: কি!!!!![ নিজের বাসায় এসে ] এই কলি(কালামের বউ) তুমি নাকি আমার পকেট থেইকা টাকা চুরি করো?
কলি কান্নাকাটি শুরু করে দিলো।
কালাম: দাঁড়াও, এখনি আমার শাশুড়ি রে জানাইতাছি। [কল করে] হ্যালো আম্মা?
চুমকি(জামালের শাশুড়ি) হ বাবা, কও। ভালো আছো?
কালাম : আর ভালো। আপনার মেয়ে কি আমাকে ভালো রাখলে তো।
চুমকি: ক্যান, কি হইসে?
কালাম: আপনার মেয়ে আমার পকেট থেইকা  টাকা চুরি করে।
চুমকি: কও কি! তোমার শশুড় অরে বেশি প্রশ্রয় দিসে তো।
কালাম: শশুড় মশাইরে  দেন।
কলি: আব্বারে কি কইবা। আব্বা তো সব জমিজমা তার আরেক বউরে  দিয়া দিছে । 
চুমকি: কি!!! তোর আব্বা আরেকটা বিয়া করসে, আবার জমিজমা দিসে! আমি পরে বলতাসি বাবা।
ফোন রেখে চুমকি বারান্দায় এলো। দেখলো, ওর স্বামী ফোনে কথা বলছে।
চমক(চুমকির স্বামী): না না, চুমকি এখনও জানে না  যে আমি আরেকটা বিয়া করসি।
চুমকি:[চমকের হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে] অই, তরে আইজকা দেইখা লমু। আইতাসি তর বাড়ি, তুই আমার স্বামীর জমি নিবি! তরে দেখতাসি।
আকাশী(চমকের আরেক বউ): [ফোন কেটে দিয়ে]  হায়রে, ধরা পড়ে গেছি। আপুকে একটা ফোন দেই।[আপুকে ফোন দিয়ে ] হ্যালো আপু, চমক আর আকাশ(আকাশীর আরেক স্বামী) এর সব জমিই তো নিলাম। এবার তুমি আর তোমার জামাই এসে আমাকে নিয়ে যাও আর অন্য জায়গায় বিয়ের ব্যাবস্থা করো।
আকাশী ফোন রেখে আকাশের কাছে গেলো।
আকাশী: শুনছো, আমার বোন আসবে। কিছু টাকা দাও, সামী(আকাশীর ছেলে) কোচিং থেকে আসার সময় মুরগি আনবে নে।
আকাশ: এই নাও
আকাশী টাকা টা নিয়ে  সামীর কাছে গেলো।
আকাশী: শোন, তোর খালা, খালু আসছে। কোচিং থেকে আসার সময় ভালো দেখে মুরগি আনবি।
সামী : আচ্ছা ।
বিকাল ৪:০০ টা বাজে। কোচিং থেকে বাসায় ফিরছিল শফিক আর সোফিয়ার একমাত্র ছেলে রবি। হঠাৎ ওর বন্ধু সামী ওকে ডাক দিলো। সামীর হাতে একটা  মুরগি ছিলো । সামী ওর কাছে আসলো।
সামী: দেখ দোস্ত  , আজকে আমার খালামনি আর খালু আর খালু আসছে। তাই মুরগি টা কিনলাম।
রবি: তো আমি কি করবো কুত্তা!!!
এই ঘটনার শেষ কোথায়, জানিনা। কিন্তু এটা জানি, সমাজে প্রতিনিয়ত এরকম ঘটনা ঘটছে। সত্য যে কখনও লুকিয়ে  থাকে না , এই গল্পটা তারই প্রমাণ । তাই এমন কোনো কাজ করা উচিৎ নয় যা সবার কাছে লুকোতে হয় কারণ একটা সময় তা প্রকাশ পাবেই।
{সমাপ্ত}